ডাকসু-জাকসুতে ছাত্রদলের পরাজয় কি গতানুগতিক রাজনীতি অবসানের সংকেত?
ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা কিসের পক্ষে-বিপক্ষে রায় দিল? অনেকে বলছেন এটি ক্ষমতার দাপট, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে। তবে শিবির জোটের জয় ও ছাত্রদলের পরাজয় কি সনাতন ছাত্ররাজনীতির পতনের সংকেত?
Shibir’s sweeping victories in the DUCSU-JUCSU polls raise pressing questions: do they signal a genuine student rejection of violence, extortion, and coercive politics, or merely the outcome of Shibir’s organizational muscle? Does the defeat of BNP’s student wing reflect a passing weakness, or expose a deeper erosion of traditional student politics? And ultimately, might these elections redefine the trajectory of campus leadership in Bangladesh?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের বড় জয় শুধু ছাত্রদলের জন্য নয়, পুরো ছাত্ররাজনীতির জন্যই একটি বার্তা। শিক্ষার্থীরা এবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে—চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বের রাজনীতি তারা আর চায় না।
ডাকসুতে ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতে এবং জাকসুতে সাধারণ সম্পাদকসহ ২০টি পদে জয়ী হয়েছে শিবির–সমর্থিত প্রার্থীরা। অন্যদিকে ছাত্রদল কোনো আসন জিততে পারেনি; জাকসুতে তো শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকেই সরে দাঁড়ায় তারা। শিক্ষার্থীরা এ ধরনের আচরণ ভালোভাবে নেয়নি, বরং ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছে।
কেন শিক্ষার্থীরা শিবিরকে বেছে নিল?
শিবিরের শিক্ষার্থীরা নানামুখী পড়াশোনায় সফল, তাদের একাডেমিক কৃতিত্ব ঈর্ষণীয়। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক বা যৌন হয়রানির অভিযোগ নেই। বরং তারা ভদ্র, সংগঠিত এবং ধারাবাহিকভাবে জনকল্যাণমূলক কাজ করেছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা শিবিরকেই ‘নিরাপদ’ বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করেছে। জুলাই বিপ্লব–পরবর্তী সময়ে শিবির মাঠে সক্রিয় থেকে যে সুযোগ কাজে লাগিয়েছে, তার সুফল তারা এবার ভোটে পেয়েছে।
কেন হারল ছাত্রদল?
ছাত্রদলের পরাজয়ের কারণ দৃশ্যমান। প্রথমত, অতীতে ছাত্রলীগ–ছাত্রদলের দখলদার রাজনীতির অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। দ্বিতীয়ত, ছাত্রদলের প্রার্থীদের দম্ভপূর্ণ আচরণ শিক্ষার্থীদের দূরে ঠেলে দিয়েছে। তৃতীয়ত, সংগঠনের ভেতরের গ্রুপিং ও কোন্দল নির্বাচনী প্রচারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চতুর্থত, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কিছু অবমাননাকর বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মনোক্ষুণ্ণ করেছে। আর সবশেষে, জাকসুতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো তাদের দুর্বলতাকেই সামনে এনেছে।
সামনে রাকসু–চাকসু নির্বাচন
এখন দৃষ্টি রাকসু ও চাকসুর নির্বাচনের দিকে। ছাত্রদল যদি এখানেও ঘুরে দাঁড়াতে চায়, তবে তাদের ভেতরের কোন্দল বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শিক্ষার্থীবান্ধব রাজনীতি ছাড়া আর কোনো পথ নেই। সেই সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরও বক্তব্যে সংযম দেখাতে হবে।
ডাকসু–জাকসুর অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, শিক্ষার্থীরা এখন আর স্লোগান বা দলীয় পরিচয়ে ভোট দেয় না—তারা দেখে কারা আসলে তাদের পাশে থাকবে। শিবির জিতেছে বলে নয়, শিক্ষার্থীরা তাদের আস্থার জায়গায় ভোট দিয়েছে বলেই এ ফলাফল এসেছে। এই বার্তাটি যদি ছাত্রদল উপলব্ধি না করে, তবে সামনে রাকসু–চাকসুতেও তাদের জন্য অপেক্ষা করছে একই পরিণতি।
About the Author:
Md. Sumon Ali is a PhD Student of Communication at the University of Wisconsin-Milwaukee, USA. He can be reached at sumon.jms@gmail.com.
Disclaimer: The views expressed in this article are the author’s own and do not necessarily reflect The Insighta’s editorial stance. However, any errors in the stated facts or figures may be corrected if supported by verifiable evidence.